উপেক্ষা অনর্থক (পর্ব - ৪) - Ever Fact

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday, June 19, 2020

উপেক্ষা অনর্থক (পর্ব - ৪)

আপনার হয়তো মনে হতে পারে এখানে তো শুধু ফারহানের সব কষ্টের কথা বলা হয়েছে। তবে এর নাম কেন এত রোম্যান্টিক রাখা হয়েছে। আমি এর নাম এমন দিলাম কারণ পৃথিবীতে এমন কেউ আছে যে চেহারা দেখে নয় মনকে বুঝে কাউকে ভালবাসে। আর এমনই কারর সন্ধান পায় ফারহান। কীভাবে পায় সেটা ক্রমশ্য প্রকাশ্য।

উচ্চ বিদ্যালয়। বাংলাদেশের শিক্ষা পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ফারহান যখন যায় তখন সে চাইছিল যে দূরের কোথাও যেন তাকে পড়া লেখার জন্য পাঠানো হয়। ফারহানের বাবা তাকে ফাহিমের তুলনায় অনেক আদর করেন। তাই তিনি ফারহানের এই অনুরোধ রাখলেন। ফারহান পড়া লেখায় অনেক ভাল ছিল। কারণ তার তো শুধু একটাই নেশা ছিল। অপরদিকে ফাহিম লেখাপড়ায় এতই খারাপ যে অনেক সময় ফেলও করে। তাও যদি সে পড়ালেখা করে ফেল করতো তাহলে মেনে নেওয়া যেত। ফাহিম তো ঠিক মত পড়ালেখাই করে না। আর এই বয়সেই বন্ধুদের সাথে স্কুল ফাকি দেয় যা ফারহান কখনই করেনি।


ফারহানের জীবনটা ছিল একদম অন্যরকম। খুব সকালে সে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে নাস্তা খেয়ে পড়তে বসে। তারপর গোসল করে স্কুলে চলে যায়। তার স্কুল কিছু দূরে হওয়ায় তার বাবা তাকে সাইকেল কিনে দেন। সে সাইকেলে করে প্রতিদিন স্কুলে যায়। সে তার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক ভালবাসা পেত। কারণ ফারহান যেমন পড়ালেখায় ভাল ছিল ঠিক তেমনি সে শিক্ষকদেরও অনেক সম্মান করতো। স্কুলে গেলে সে একদম কম কথা বলতো। প্রয়োজনের অধিক কিছুই বলতো না। সে কারর দিকে ফিরেও তাকাতো না। কারণ তার মনে একটাই কথা ছিল যে, আমি কারর সাথে কোনো সম্পর্কে আবদ্ধ হবার যুগ্য নই।


টিফিনের সময় টিফিন করে অনেক ছেলে স্কুলের মাঠে কিছু সময় খেলাধুলা করে। সে খেলাধুলাতো অন্য কথা অকারণে সে ক্লাস থেকেই বের হয় না। স্কুল ছুটির পরে ফারহান বিকালে বাড়ি ফিরে। বাড়ি ফিরার পরে সে খাবার খেয়ে বের হয় যায়। ফারহান এমনিতেই অনেক কম কথা বলে। সেটা স্কুলে হউক অথবা বাড়িতে। সে একদম নীরবে বিকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। মাঠে অনেক ছেলে খেলাধুলা করে। কেউ তাকে খেলার জন্য ডাকে না আর সেও খেলতে চায় না। ফারহান বিকালে হাটতে নদীর ধারে গিয়ে বসে। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত সে নদীতে চলা নৌকাগুলো দেখে। শীতল হাওয়াকে সে আপন করে নেই। যেখানে সামাজিক কোনো কিছুতে তার সব অধিকার যখন মানুষ কেড়ে নিয়েছে তখন সে প্রকৃতিকেই আপন করে নিয়েছে। সন্ধ্যা পরে ফারহান বাড়ি ফিরে যেই পড়তে শুরু করে আর রাত ১১টায় খাবার আগে পড়া ছেড়ে উঠে। রাতের খাবার ফারহান তার কক্ষে একাই খায়। এটা ইচ্ছাতেই। তার ভাল লাগে না সবার সাথে একসাথে বসে খেতে। রাতে খাবার পরে সবাই বসে কিছু সময় গল্প করে আর তখনই ফারহান ঘুমিয়ে যায়।

সবাই বলে যায় কেউ নেই তার আল্লাহ আছেন। তবে কী জানি আল্লাহ ফারহানের জীবনে কী রেখেছেন। ফারহানের মনে হতাশা ছাড়া কিছুই ছিল না। ধীরে ধীরে ফারহান বুঝতে পারে যে তার হতাশার কোনো কারণ নেই। সে তার মত যখন চলতে পারছে তখন তার এত চিন্তার কী দরকার। ফারহান তো ধরেই নিয়েছে যে কোনো কিছুতেই তার কোনো অধিকার নেই। সে তার মত চলতে লাগলো।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad